দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত প্রথম বাংলা উপন্যাস। ১৮৬৫
সালের মার্চ মাসে এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়। দুর্গেশনন্দিনী
বঙ্কিমচন্দ্রের চব্বিশ থেকে ছাব্বিশ বছর বয়সের রচনা। এই উপন্যাস প্রকাশিত
হওয়ার পর বাংলা কথাসাহিত্যের ধারায় এক নতুন যুগ প্রবর্তিত হয়। ষোড়শ
শতাব্দীর শেষভাগে উড়িষ্যার অধিকারকে কেন্দ্র করে মোঘল ও পাঠানের সংঘর্ষের
পটভূমিতে এই উপন্যাস রচিত হয়। উপন্যাসটির কাহিনী সংক্ষেপ হলঃ-দিল্লীশ্বরের
প্রধান সেনাপতি অম্বররাজ মানসিংহের পুত্র কুমার জগৎ সিংহ বিষ্ণুপুর থেকে
মান্দারণ যাত্রাকালে ঝড়ের কবলে পড়ে শৈলেশ্বর মহাদেবের মন্দিরে আশ্রয়
নেন। সেখানে ঘটনাচক্রে মান্দারণ দুর্গাধিপতি জয়ধর সিংহের একমাত্র পুত্র
মহারাজ বীরেন্দ্র সিংহের স্ত্রী বিমলা ও তাঁর কণ্যা দুর্গেশনন্দিনী
তিলোত্তমার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। পরস্পর পরস্পরের প্রকৃত পরিচয় গোপন
রাখলেও জগৎসিংহ ও তিলোত্তমা পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হন। পরে পাঠান সেনাপতি
ওসমান খাঁ সুকৌশলে মান্দারণ দুর্গ অধিকার করে ও বীরেন্দ্র সিংহ এবং তাঁর
স্ত্রী বিমলা ও কণ্যা তিলোত্তমাকেও বন্দী করে। কুমার জগৎ সিংহও বন্দী হন।
যদিও পাঠান নবাব কতলু খাঁর বিচারে বীরেন্দ্র সিংহকে হত্যা করা হয়। নিহত
বীরেন্দ্র সিংহের স্ত্রী বিমলা পাঠান নবাব কতলু খাঁকে হত্যা করে পতি হত্যার
প্রতিশোধ নেয়। পাঠানেরা কুমার জগৎ সিংহের মাধ্যমে অম্বররাজ মানসিংহ তথা
দিল্লীশ্বরের সঙ্গে সন্ধি করেন। অন্যদিকে কতলু খাঁর কন্যা নবাবজাদী আয়েষা
জগৎ সিংহের প্রেমে পড়েন। আয়েষার প্রণয়ী পাঠান সেনাপতি ওসমান একথা জানার
পর ক্রোধে কুমার জগৎ সিংহের সঙ্গে দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। পরিশেষে
মান্দারণ পুনরায় স্বাধীন হয় ও দিল্লীশ্বরের প্রধান সেনাপতি অম্বররাজ
মানসিংহের মাধ্যমে মহারাণী বিমলার হস্তে রাজ্যপাঠ হস্তান্তরিত হয় এবং
মহাধুমধামের সাথে কুমার জগৎ সিংহ ও দুর্গেশনন্দিনী তিলোত্তমার মিলন ঘটে।তবে
এটিকে সম্পূর্ণরূপে ঐতিহাসিক উপন্যাস মনে করা হয় না।পাঠক বাংলার এই
প্রথম উপন্যাসটি আশা করি ভাল লাগবে আপনাদের কাছে।তাই মিস না করে পড়ে ফেলুন।