Friday, September 15, 2017

আবদুল্লাহ - কাজী ইমদাদুল হক

আবদুল্লাহ: বাঙালি মুসলমানের সমাজচিত্র

বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকে লেখা আবদুল্লাহ উপন্যাস বাঙালি মুসলমানের সমাজচিত্র হিসেবে মুল্যবান। চিত্রাঙ্কনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লেখকের সমাজ সমালোচনা। যা ক্ষয়িষ্ণু,যা অসংগত, যা কুসংস্কারচ্ছন্ন তাকেই লেখক প্রবলভাবে আক্রমণ করেছেন।


আবদুল্লাহ উপ্নন্যাসে বাঙালি মুসলমান সমাজের যেসব সমস্যার প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে, পিরবাদ তার মধ্যে অন্যতম। আবদুল্লাহ আধুনিক সিক্ষায় শিক্ষিত ,ধর্মপ্রান, কিন্তু কুসংস্কারবিরোধী। তার মতে ,পির মুরিদি ব্যবসাটা হিন্দুদের পুরুতগিরির অনুকরন,ইসলামে তার স্থান নেই। কাসেম গোলদারের বাড়িতে নিজের প্রতপুরুশের অলৌকিক ক্ষমতার গল্প শুনে তার মনে বিস্ময় জাগে।পির হওয়ার সহজ পথ ত্যাগ করে আবদুল্লাহ চাকরি করে উপার্জন করতে প্রব্রিত্ত হয়েছে।


আশরাফ আতরাফ ভেদ আরাক সামাজিক সমস্যা। সৈয়দ সাহেবের মাদ্রাসায় এদের পাঠদানের বৈষম্য দেখে আবদুল্লাহ বিস্মিত হয় এবং মৌল্ভী সাহেবকে এর কারন জিজ্ঞাসা করে। মৌলভী সাহেব জানান, আতরাফের সন্তানেরা তো মিয়াদের সমান চলতে পারেনা, তাই সৈয়দ সাহেব এই বিষম শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছেন।আবদুল্লাহ যখন ব্লে,একেবারেই যদি তাদের পড়ানো না হয়, তাহলে কি আরো ভালো হয়না। মৌলভী সাহেব তখন বলেন গরিবেরা যখন শিখতে চায় , তখন তাদের একেবারে নিরাশ করলে খোদার কাছে কি জবাব দেবেন, তাছাড়া গোমরারে এলেমদান করলে অনেক সয়াব হয়। কিতাবে আছে।এই সমস্যার চরম অভিব্যাক্তি দেখা যায় মসজিদের ইমাম জোলা বলে যখন সৈয়দ সাহেবের এমন বংশাভিমান সম্পর্কে কোনো ক্তহা বলেন না। এই অশিষ্টতার বিরুদ্ধে আবদুল্লাহ এক মূর্তিমান প্রতিবাদ। সে জোলা ইমামের কাছে ক্ষমা চেয়েছে।


পর্দাপ্রথার শ্বাসরুদবকর কড়াকড়ির বিরুদবে আবদুল্লাহ সাহস করে দাঁড়িয়েছে। পল্লী সমাজের পরনিন্দা প্রব্রত্তি এবং খাতকের প্রতি মহাজনের অত্যাচারের চিত্র উদ্ঘাটনে কাজী ইমদাদুল হক অকুন্ঠ ।হিন্দু মুস্লমান বিরোধের পর্যালোচনাও তিনি করেছেন, সেখানে তিনি দায়ী করেছেন স্মপ্রদায়কে নয় ব্যাক্তিকে। লেখক বুঝিয়ে দিয়েছেন ,সকল সামাজিক মুঢ়তা ত্যাগ করে শিক্ষার আলোকে স্নাত হয়েই তবে সমাজ সচল ও সজীব রাখা যাবে